Blog

কমদামি আতরে যত ক্ষতি

আতর আমাদের সবারই কমবেশি পছন্দের। সেই পছন্দের খাতিরেই হয়তো আমরা প্রায়ই পথেঘাটে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ আতরের দোকান থেকে স্বল্প মূল্যের আতর নিয়ে থাকি। মূলত কম দাম অথচ তীব্র সুঘ্রাণের কল্যাণে আমরা ভাবি এটা নিশ্চয় ভালো কোয়ালিটি প্রোডাক্ট। অথচ কোয়ালিটিফুল আতরের প্রকৃত মূল্য কেমন হয় আমরা কি ভেবে দেখছি? ভার্সিটিতে পড়ার সময় রিসার্চ টপিক হিসেবে আগর গাছ নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেই সুবাধে জানি মানসম্পন্ন এক কেজি আগর কাঠ লাখ টাকায়ও বিক্রি হয়, যা ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান কিনে নেয় এবং পরে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পাওয়া যায় কোয়ালিটিফুল উদ! তাছাড়া বিভিন্ন ফুলের এক্সট্রাক্ট থেকে যে আতরগুলো তৈরী হয় তাও একইরকম খরুচে প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷ অথচ আমরা কমদামে তীব্র সুঘ্রাণের আতর পেয়ে সানন্দে কিনে নিচ্ছি। এখন কথা হলো এত সুঘ্রাণ বিশিষ্ট আতর এত কম দামে তারা কীভাবে দিচ্ছে? উত্তর হচ্ছে একটাই আপনি যেটাকে ফুলের নির্যাস ভাবছেন সেটা মূলত ক্যামিকেল। বিভিন্ন টক্সিক ক্যামিকেলের তীব্র ঝাঝের ফসল হলো এইসব সস্তা আতরের সুঘ্রাণ। মূলত এইসব আতরের বেজ নোটগুলো বেশ ঝাঝালো থাকে যা ব্যবহারের সাথে সাথে তীব্র ঘ্রাণে ছেয়ে দেয় কিন্তু ঘন্টাখানেকের মধ্যে সেই ঘ্রাণ নি:শেষহ হয়ে গেলে বাকি থাকে শুধু কেমিম্যাল! কয়েকদিন আগে আমরা খবরে দেখতে পেলাম আতরের ঘ্রাণে পুলিশ লাইন স্কুলের কিছু ছাত্রছাত্রী তৎক্ষনাৎ অসুস্থ হয়ে যায়৷ এটা হলো এই সস্তা আতরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এছাড়াও এইসব আতর আর কী কী ক্ষতির কারণ হতে পারে? -ত্বকে ব্যবহার করলে বিভিন্ন স্কিন ডিজিজ, বিশেষ করে ত্বকে র‍্যাশ পড়ে যায়। -কাপড়ে বিশেষ করে সাদা কাপড়ে দেখবেন হলদে দাগ পড়ে যায় যা সহজে উঠতে চায়না -এসব আতর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তীব্র ঝাঁঝালো হয় যা অনেকের এলার্জির কারণ হয়। -বিভিন্ন কার্সেনোজেনিক পদার্থ (যেমন- ক্যাডমিয়াম, বেরিলিয়াম) ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকে এসবে। তাই শুধু আতরের প্রতি আগ্রহ আছে এইজন্যেই জেনে কিংবা না জেনে স্বল্পমূল্যের আতর ব্যবহারে আমাদের আরো সতর্ক হওয়া উচিৎ। মনে রাখবেন স্বল্পমূল্যের ২০ মিলি আতরের চেয়ে কোয়ালিটিফুল ৩ মিলি আতরেরও উপযোগিতা সবসময় বেশি। আর স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে কোয়ালিটি আতরের বিকল্প নেই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *